আমি যেবার আইবিএতে চান্স পেলাম, সেবার আসলে পরীক্ষা দিব কিনা সে ব্যাপারে নিজেই কনফিউসড ছিলাম ।
কারন, এর আগের ইনটেকে ভালোভাবে এফোর্ট দিয়েও হয়নি, তাই মন-টন খারাপ ছিল । এবারো যদি না হয় সে চিন্তা করে কিছুটা ডিপ্রেসড ছিলাম ।
এরপর ভাবলাম আচ্ছা ঠিক আছে এক্সাম দিব কি দিব না সেটা পরে ভাবতেছি । আগে ১৫ দিনের মত ১টা এফোর্ট দেই । যদি মনে হয় সম্ভাবনা আছে তাহলে লাস্ট মোমেন্টে গিয়ে ফর্ম-ফিল আপ করবো ।
এবার আমি আমার এপ্রোচটা একটু ভিন্নভাবে নিলাম । সিদ্ধান্ত নিলাম আইবিএর প্রস্তুতি নিচ্ছি এটা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে দিব ।
আমি ম্যাথ, ইংলিশ, এনালিটিক্যালগুলোকে একটু ভিন্নভাবে দেখার এবং শেখার চেস্টা করবো । এগুলোকে আমার এনজয়মেন্টের ১টা পার্ট বানায় ফেলবো ।
যেমনঃ আমি ম্যাথ করতাম জিম্যাট ক্লাব আর মেজর টেস্টের ওয়েব সাইট থেকে । সেখানে সেই ম্যাথগুলার পেছনেই টাইম দিতাম যেগুলো আমি নিজে পারতাম না ।
জিম্যাটের কিছু কিছু টপিক আছে যেগুলো আইবিএতে ওভাবে আসে না । তাই সব ম্যাথ করতেও যেতাম না ।
আইবিএর আগের বছরের প্রশ্ন ঘেঁটে যে যে টপিকগুলো আসে সেগুলোর ১টা লিস্টও বাছাই করলাম । জিম্যাট ক্লাব থেকে বেছে বেছে শুধু সেইটপিকগুলোই করতাম ।
ওদের ফোরামে দেখতাম একেকটা ম্যাথের অনেক টাইপের সল্যুশন বিভিন্ন মানুষজন দিয়ে থাকেন । আমি সেগুলোর বাইরে গিয়েও সম্পুর্ন নতুন উপায়ে নিজে কিছু বের করার চেস্টা করতাম ।
এই পদ্ধতিতে ১টা ম্যাথের পেছনেই অনেক সময় নস্ট হত । কিন্তু আলহামদুলিল্লাহ্ ,ব্যাসিক অনেক ক্লিয়ার হয়ে গিয়েছিল ।
ইংলিশ প্রস্তুতির জন্য গ্রামার বই পড়া ধরতে গেলে ছেড়েই দিয়েছিলাম । প্রচুর পরিমানে রিডিং পড়তাম । আমার আশে-পাশের সার্কেলের সাথে ইংলিশেই কথা বলতাম ।
যদিও এতে করে আশে-পাশের মানুষজন অনেক বিরক্ত হত , টিটকারী দিত। কিন্তু আমি ইগ্নোর করতাম ।
আর ইংরেজী শুনতামও প্রচুর । বিশেষ করে রাস্তা-ঘাটে যখন বের হতাম তখন তখন কানে ১টা হেডফোন থাকতোই ।
ওই সময়টায় বিবিসি থেকে শুরু করে ইসলামিক লেকচার( ইয়াসির কাদি, নোমান আলি খান, মুফতি মেনক) কোন টাই বাদ যেত না ।
আমি এনসিউর করার চেস্টা করতাম যে, আমার কোন সময় যেন ইংলিশ শোনা, বলা, পড়া বা লেখা ব্যাতীত না কাটে ।
এমনকি সাবকনসাস মাইন্ডে যে চিন্তাগুলো আসে সেটাও ইংলিশে করার ট্রাই করতাম ।
ইংলিশের গ্রামাটিক্যাল কনটেন্টও আমি ম্যাথের মতই এপ্রোচ নিয়েছিলাম । বিশেষ করে জিম্যাটের ৭০০ লেভেলের সেন্টেন্স কারেকশনগুলো দেখতাম ।
ভুল উত্তরগুলো কেন ভুল হচ্ছে সেদিকে বেশী ফোকাস করতাম । আরেকটা ব্যাপার মাথায় রাখা ভালো যে, আইবিএতে জিম্যাট ৭০০ লেভেলের প্রশ্ন আসে না বড়জোড় ৬৫০ পর্যন্ত আসবে ।
আমি ইচ্ছা করেই লেভেলটা একটু বাড়িয়ে নিয়েছিলাম যাতে করে আমার বেসটা আরো শক্ত হয় ।
ভোকাবুলারীর জন্য আমি মূলত কোন লিস্ট বা কোন বই ফলো করিনি । নিউজপেপার,আর্টিকেলে যে ভোকাবুলারীগুলো পেতাম সেগুলো নোটস নিয়ে রাখতাম ।
আর প্রতিদিন আমার সারাদিনের এক্তিভিটির উপর কিছু না কিছু লিখতাম । লেখার সময় চেস্টা করতাম আমার আগের লাইনের সাথে পরের লাইনের প্যাটার্নে যেন কোন মিল না থাকে ।
অর্থাৎ, আগের লাইনটা যদি সিম্পল সেন্টেন্সে লেখা পরেরটা যেন কমপ্লেক্সে হয় । আর প্রতিদিন বিভিন্ন নিউজ পেপার আর্টিকেল থেকে যে নতুন ভোকাব পেতাম সেগুলো রাইটিং-এ এপ্লাই করার ট্রাই করতাম ।
এনালাইটিক্যাল পাজলের জন্য 200 Puzzle Pdf নামে ১টা ফাইল আছে সেটাই শলভ করতাম । ফাইলটি Capstone এর গ্রুপে র ফাইল সেকশনে দেয়া আছে ।
অথবা GRE Book দেখলেও হবে ।
এভাবে জাস্ট ১৫-২০ দিন কন্টিনিউ করার পর মনে হল যে, এক্সামটা দেয়া যায় । শেষমেশ একবারে লাস্ট দিনে গিয়ে ফর্ম ফিল-আপ করেছিলাম ।
আলহামদুলিল্লাহ্ হয়ে গিয়েছিল ।
কিছু শেষ কথাঃ
১। এডমিশন টেস্টে আত্ন- বিশ্বাস অনেক জরুরী । আর আত্ন- বিশ্বাস অনেক বেশী প্র্যাক টিস ছাড়া অর্জন সম্ভব নয় ।
২। টাইম ম্যানেজমেন্ট অনেক ক্রশাল ফ্যাক্টর । তাই অবশ্যই মডেল টেস্ট দিন । এবং সেটা অবশ্যই প্রতিযোগিতামুলক পরিবেশে । যেন আপনার চারপাশে সত্যিকার ক্যান্ডিডেট, এক্সামিনার সব থাকে । আপনি যেন এক্সাম দিনের চাপটা অনুভব করেন । এটা বাসার পরিচিত এনভায়রনমেন্টে বসে কোনদিনও পাওয়া সম্ভব না ।
Capstone Education হুবুহু আইবিএর আদলে ১০টি মক টেস্ট নিবে, সাথে ৩টি শলভ ক্লাস আর ১টি রাইটিং ক্লাসও থাকবে । আর প্রতিটি মক টেস্টের পর ১টা কম্বাইন্ড মেরিট লিস্ট প্রকাশ করা হয় । এতে করে আপনি আপনার র্যাংকিংটাও আপনি বুঝতে পারবেন ।
৩. প্রস্তুতি যেরকমই হোক না কেন পরীক্ষাতে অংশ নিন । এতে করে আপনি অন্তত বুঝতে পারবেন যে, আপনি লক্ষ্য থেকে ঠিক কত দূরে আছেন । সে অনুযায়ী পরেরবারের জন্য ১টা ভালো প্ল্যানিং করে আগাতে পারবেন ।
৪। কোন ১টা টপিক না পারলে বা না বুঝলে বেশী কচলা-কচলী করার দরকার নেই । সেটা বাদ দিয়ে অন্যগুলোয় মুভ অন করুন ।
৫। রেগুলারিটি মেইন্টেইন করুন । একদিনে রাজ্যজয় হবে না । সো ধৈর্য্য ধরে ১টা রুটিন স্ট্রিকলী এক মাস ফলো করুন । এটাই
হয়ত আপনার জন্য গেম চেঞ্জার হয়ে যাবে ।
শুভ কামনা সবার জন্য 🙂
0 Comments
Leave a comment