আইবিএ নিয়ে আমাদের নিয়মিত আয়োজনে আজ লিখেছেন আইবিএর ৫৭ ব্যাচের ছাত্র, Capstone Education স্পেশাল ব্যাচের এক্স-স্টুডেন্ট ও বর্তমানে Capstone এর সিনিয়র ম্যাথ টিচারদের একজন কিশোর ভৌমিক ।
আইবিএ তে পড়ার স্বপ্ন অনেক আগে থেকেই ছিল। গ্রাজুয়েশন শেষে সবাই যখন চাকরিতে ঢুকার চেষ্টা করছিলো তখন আমি স্বপ্ন তাড়া করার সিদ্ধান্ত নেই।
অনেক কঠিন ছিল সময়টা। চান্স পাব কিনা তার কোন নিশ্চয়তা ছিল না।অন্যদিকে বন্ধুরা চাকরিতে যোগ দিচ্ছিল।কিন্তু ধৈর্য্য হারাইনি।বাসায় নিজে নিজে প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম।
তিনমাস ঘরে বসে থাকায় চান্স পাওয়ার প্রেশার বাড়ছিল। ৫৬ ইনটেকের দুইমাস বাকি, তখন Capstone Education-এ একটা ক্রাশ ব্যাচ শুরু হয়।প্রস্তুতিটা পুর্ন করার জন্য ভর্তি হলাম।
প্রস্তুতি ভাল ছিল,খুবই আশাবাদী ছিলাম। পরীক্ষার আগের রাতে ঘুমাতে পারলাম না। চান্স পেতেই হবে,প্রচন্ড প্রেশার নিয়ে পরীক্ষা দিতে গেলাম এবং যথারীতি স্ট্রেস মেনেজমেন্টে ধরা খেলাম।
যার ফল পড়ল টাইম মেনেজমেন্টে।প্রস্তুতির তুলনায় খুবই বাজে হল পরীক্ষা। ফলাফল যা হওয়ার তাই হল।খুবই হতাশ হলাম,এত ভালো প্রিপারেশনেও পারলাম না,তাইলে বুঝি আমাকে দিয়ে আর হবে না।
টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার বলে কথা। আইবিএর ৫৬ এর রেজাল্ট দেয়ার সাত দিনের মাথায় চাকরিতে জয়েন করি।কিন্তু ফ্যাক্টরিতে জব করার সময় শুধু মনে হত এই জায়গায় তো আমার থাকার কথা ছিল না।
চারপাশের পরিবেশ দেখে মনে হত আমার তো আইবিতে থাকার কথা। তিন মাসের মাথায় সিদ্ধান্ত নেই ,আমাকে স্বপ্ন পুরণ করতেই হবে।
কঠিন সিদ্ধান্ত নেই,সবাই মানা করলেও চাকরি ছাড়ি। এইবার ৫৭ ইনটেকের দুই মাস বাকি। ভাবলাম আগেরবার যখন পাঁচ মাসে পারি নাই এখন দুইমাসে অসম্ভব।
৫৮ ইনটেক টার্গেট করি এবং জানুয়ারি ,২০১৭ থেকে পড়ার পরিকল্পনা করে দিব্যি ঘুড়ে বেড়াচ্ছিলাম। ৫৭ ইনটেক দেবনা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। Capstone-এ তখন মডেল টেস্ট চলছিল।
মূল পরীক্ষার ৮/৯ দিন আগে Capstone Education এর ডিরেক্টর তাজুল ভাই নক করে ৫৭ ইনটেকে পরীক্ষা দিতে বললেন আর মডেল টেস্ট দেয়ার জন্য ডাকলেন। অলরেডি ৭টা টেস্ট চলে গেছে।
শেষ তিনটা টেস্ট দিলাম এবং বুঝলাম ছুরি এখনও আগের মতই ধারালো ,ঝোপ বুঝে কোপ দেয়া যেতে পারে।
সময় খুব কম,সব একবার রিভাইস দেয়ারও টাইম নাই। তাই পড়লাম না বললেই চলে,শুধু আগের বারের পরীক্ষায় কেন হল না তা নিয়ে গবেষনা করলাম।
এইবার একদম প্রেশার না নিয়ে আগের বার যেইসব ভুল পরীক্ষার সময় করেছিলাম সেই সব দিকে সতর্ক থেকে মোটামুটি একটা পরীক্ষা দিলাম, যদিও অল্প কিছুদিনের প্রিপারেশনের তুলনায় অনেক ভাল হয়েছিল।
নিজেকেও অবাক করে দিয়ে রিটেনে টিকে গেলাম এবং ভাইভা পেরিয়ে ঠিক পূরণ করে ফেললাম স্বপ্নটা। 😀 😀 😀
এইবার জাতির উদ্দেশ্যে কিছু অভিজ্ঞতালব্ধ কথা,স্বপ্ন পুরনের জন্য চাকরি ছাড়ার মত বোকামিও কাজে লাগবে যদি তার পর আইবিএ এর মত জায়গায় চান্স পাওয়া যায়।
বাইরে থেকে আইবিএ শুধু অনেক রঙ্গিন মনে হয়,কিন্তু ভেতরের সৌন্দর্য্য কল্পনার বাইরে। এইটা উপভোগ করার জন্য হলেও বার বার চেষ্টা করা যেতেই পারে।
একবার না পারিলে দেখ শতবার কথাটি আমাদের দেশে শুধুমাত্র আইবিএ এর জন্য প্রযোজ্য।ধৈর্য্য হারাবেন না।কে জানে যখন হার মেনে নিচ্ছেন তখন আপনি জয়ের অনেক কাছে কিনা।
কিভাবে কি কি পড়েছিলাম, ২য় বার পরীক্ষা দেয়ার সময় কোন কোন ভুল গুলো ভুলেও করিনি আর ভাইভার অভাবনীয় আভিজ্ঞতা অরেকদিন শেয়ার করবো। 🙂
0 Comments
Leave a comment