অলিম্পিকে অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর মধ্যে সব থেকে বেশি জনসংখ্যার দেশ কিন্তু কখনো পদক জিতেনি এমন দেশ হলো বাংলাদেশ।
আজকে আমেরিকার এক পত্রিকায় নিউজ হয়েছে। একজন আমাকে বলেছে এটা নিয়ে কিছু লিখতে।
এটা নিয়ে ৩০০ পৃষ্ঠা লেখা সম্ভব তবে সেটা মেগবাইটের অপচয় ছাড়া আর কিছু নয়। কারণ সবাই জানে কারণ গুলা কি কি কিন্তু কেউ কিছু করবে না।
আমি বরং কিছু তথ্য দেই, অলিম্পিক পদক জয় অনেক পরের ব্যাপার, অলিম্পিকে পদক জয় করার জন্য যে কোয়ালিফায়িং রাউন্ড পার করতে হয় সেটাই আজ পর্যন্ত বাংলাদেশের কেউ পারে নি একমাত্র এবার গলফার সিদ্দিকুর ছাড়া।
৬০ জন গলফার নেওয়ার কথা সিদ্দিকুর ৫৬ হয়ে কোয়ালিফাই করেন। সাতার মাতার শুটিং এ আমরা সেধে সেধে এথলিট পাঠাই।
ঝড়ে বক মরে কথাটা মানে হচ্ছে ভাগ্যে লেগে যাওয়া। এই জিনিস আমার একবার লেগেছিল।
আল আরাফা ইসলামী ব্যাংকে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর ভাইভাতে আয়তাল কুরসী জিজ্ঞেস করেছিল, আমি প্রথম লাইন বলার পরে প্রশ্নকর্তা বলেন, আচ্ছা নেক্সট কোশ্চেন, তিনি এটা বলাতে আমি বেঁচে গেলাম, আসল ব্যাপার হল আমি তখন এক লাইনই পারতাম।
এখন প্রতিবার ভাগ্য আমাকে বাঁচাবে না যদি না আয়তাল কুরসী আমি না শিখি। আসিফ যেবার কমন ওয়েলথে গোল্ড জিতে, সেটা আসলে জেতার কথা ভারতের অভিনব বিন্দ্রার।
কারণ শেষ শটে আসিফ যদি ১০ এর মধ্যে ৯ দশমিক ৪ স্কোর করে তাহলে ব্রোঞ্জ জিতার কথা আসিফ সেটাও আশা করে নি, সে ভেবেছিল ৯ দশমিক ২ স্কোরে সে চতুর্থ হবে। শেষ শটে স্কোর আসে ৯ দশমিক ৯, অবিশ্বাস্য ভাবে বিন্দ্রার সোনা ছিনিয়ে নিল আসিফ।
এরপরের ব্যাপারটা ইতিহাস, পুলিশ পিটানীতে আসিফের হাত ভাঙ্গা হয়, আর বিন্দ্রা ২০০৮ বেইজিং অলিম্পিকে সোনা জিতে। আসিফের আর কোন খবর নাই।
১৯৯৫ সালে মাদ্রাজ সাফ গেমসে ২০০ মিটারে সোনা জিতেন মাহবুব আলম। সম্ভবত সাফের রেকর্ড গড়া হয়। মাহবুবের পুরষ্কার ঘোষনা করা হয় ১ লাখ টাকা।
শুনেছিলাম, ২০১০ সালে তিনি যখন মারা যান তখন পর্যন্ত তিনি তার এই ১ লাখ টাকা পান নাই।
এখন বলেন, বানাবেন আপনার পরিবারের কাউকে এথলেট?
দৈব বলে কিছু হয় না, সবকিছুর জন্য সঠিক পরিকল্পনা লাগে, প্রতিভা লালন এবং যতন করতে হয়।
পরীক্ষার ফার্স্ট হওয়ার স্বপ্ন আপনি দেখতেই পারেন, কিন্তু ফার্স্ট সেই হয় যে তার মেধাটাকে পরিশ্রমের মাধ্যমে কাজে লাগায়।
আমাদের দেশে তো সেই সিস্টেমই নাই। সঠিক জায়গায় সঠিক লোক আমাদের দেশে কখনোই থাকে না।
ক্রিকেটে আমরা মোটামুটি সম্মানজনক পর্যায়ে আছি, এর কারণ, জনপ্রিয়তা, প্রচুর টাকা লগ্নি এবং আরও অনেক কিছু।
১৯৯৭ সালে আইসিসি ট্রফি জিতার পর ক্রিকেটে মনযোগী না হলে আজকে মুস্তাফিজুর রহমান সাতক্ষীরায় মুদি দোকান দিয়ে বসে থাকা লাগত হয়ত।
এই দেশের সব থেকে বড় সমস্যা কি জানেন? আমরা সবাই হয় কম বুঝি, নাইলে বেশি বুঝি, ঠিকটা বুঝি না। হয়ত বুঝি, কিন্তু না বুঝার ভাণ করি।
0 Comments
Leave a comment