বছরখানেক আগের কথা । ঢাকার বিজয়নগরে ১টা ওয়ার্কশপে গিয়েছি গাড়ির কাজ করাতে । সম্পূর্ণ অটোমেটেড ওয়ার্কশপ । গাড়ির চেক-আপ, প্রবলেম আইডেন্টিফাইয়িং সবকিছু অটোমেটেড মেশিনে করা হচ্ছে । খুবই ইম্প্রেসিভ সেট-আপ ।
কিছুক্ষন পর প্রতিষ্ঠানের মালিক আসলো । বয়স ৪০ এর ঘরে, ছোট-খাট, হালকা-পাতলা গড়নের স্মার্ট ব্যাক্তিত্ব । কুশলাদি বিনিময়ের পর তার অফিস রুমে নিয়ে গেল । কি করি জানতে চাইলো । বললাম, ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে এখন ঢাবির আইবিএতে এমবিএ করছি ।
আমার কথা শুনে উনাকে বেশ খুশী মনে হল । বললেন, আমি নিজে খুব বেশী দূর লেখাপড়া করিনি, তাই শিক্ষিত মানুষদের সাথে কথা বলতে ভালো লাগে ।
একটু কিউরিয়াস হয়ে গেলাম ।
জানতে চাইলাম, উনার সম্পর্কে । উনি বললেন, ক্লাস ৫ পর্যন্ত পড়ার সুযোগ হয়েছিল ।
এরপর ১২ বছর বয়সে এক মামার হাত ধরে ঢাকায় । শুরু করেছিলেন, গ্রীন রোডের জিঞ্জিরা হোটেলে হোটেল-বয় হিসেবে ! ২ বছর পরে বুঝলেন এখানে হবে না । এরপর গেলেন এক রংয়ের কারখানায় । সেখানেও এক বছরের বেশী মন টিকলো না !
এরপর ১টা হার্ডওয়ারের দোকানে ইলেক্ট্রিশিয়ান হিসেবে ২ বছর কাজ করলেন । বাট আল্টমেটলী ভালো না লাগায় ছেড়ে দিলেন !
শেষ মেষ ১৭ বছর বয়সে গ্রামের এক চাচার হাত ধরে ঢাকার গ্রীন রোডের বাগদাদ অটোমোবাইলসে কাজে ঢুকেছিলেন ।
শুরুর কয়েক বছর কোন বেতন পাননি । শুধু তিন বেলা খাওয়া পেতেন ।
২ বা ৩ বছর পর মাসে ৩০০ টাকা করে পেতেন । এভাবে প্রায় ৫ বছর পর তার বেতন বেড়ে হল ১২০০ টাকা ।
এরপর নিজেই ১টা ছোট-খাট ওয়ার্কশপ দিলেন । ঠিক ওয়ার্কশপ বলা যায় না । রাস্তার পাশে ১টা ঝুপড়ি খুলে বসা আর কি !
শুরুতে জাস্ট গাড়িতে হাওয়া দেয়া, ইঞ্জিনের ছোট-খাট প্রবলেম সেরে দেয়ার কাজ করতেন ।
আস্তে আস্তে কিছু ব্যাটারির দোকানের সাথে কমিশন ভিত্তিক চুক্তি করেছিলেন । দোকানগুলো গাড়ি রেফার করে দিবে, বিনিময়ে ঐ গাড়ির ঠিক করতে যে বিল আসবে তার ২০% কমিশন ঐ ব্যাটারির দোকানগুলোকে দিবে ।
এভাবে কয়েক বছরের মধ্যে সে নিজেই বেশ বড়-সড় পরিসরের মধ্যে তার ওয়ার্ক শপ খুলে বসে । বর্তমানে তার অয়ার্কশপে প্রায় ১৫ জন কর্মচারী আছে !
উনার একাউন্টস দেখে ঢাকার রেপুটেড ১টা ভার্সিটি থেকে এমবিএ করা একজন ছেলে । মার্কেটিং এর জন্য আলাদা ২ জন টিম আছে । তারা ঢাকার ২ স্বনামধন্য ইন্সটিটিউশনের গ্রাজুয়েট !
তার ওয়ার্কশপের মান্থলী রেন্ট, ইউটিলিটি, এমপ্লয়ী স্যালারীসহ প্রতি মাসে ফিক্সড খরচ প্রায় ৫ লক্ষ টাকা !
উনার ছেলে ঢাকা ১টা নমকরা ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে পড়ে ! নিজের ব্যাক্তিগত হিসেবে আছে ১টা টয়োটা SUV, যার মুল্য প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা ! ঢাকায় নিজের ফ্ল্যাট, জায়গা সব আছে !
সে আরো জানালো যে, নেক্সট উইকে জার্মানি যাচ্ছে ১টা মোটর-পার্টস এক্সিবিশনে ! উনার নতুন করে প্রায় ২ কোটি টাকার মেশিনারিজ ইম্পোর্ট করার প্ল্যান !
কিছুক্ষন তাকিয়ে থাকলাম উনার দিকে । যে মানুষটা হয়ত ১৫ বছর আগে এক বেলা খেলে আরেক বেলা খাবারের কোন নিশ্চয়তা থাকতো না, সে মানুষটা আজ কোন জায়গায় চলে গেছে !
উনি আরেকটা ইন্টারেস্টিং তথ্য দিলেন,গ্রামের যেই চাচা তাকে এই গ্যারেজে কাজে লাগিয়েছিল, সে চাচার নিজেরই দুই ছেলে ছিল । তারাও বেশিদূর লেখাপড়া শেষ করেনি ।
সেই চাচা অনেক করে চেয়েছিলেন যে, তার ছেলেরা যেন এই অটোমোবাইলসের অথবা ইলেকট্রিক কোন দোকানে কাজে লেগে যায় ।
কিন্তু চাচী এবং কিছু ফ্যামিলী মেম্বারদের তীব্র আপত্তির মুখে উনি সেই প্ল্যান থেকে সরে আসেন ।
চাচীর সাফ কথা ছিল, আমার ছেলেরা মেকানিকের কাজ করবে না । তাদের হাতে কালি লেপ্টে থাকবে এটা উনি দেখতে পারবেন না
। আজকে নাকি সেই ছেলেরা অন্যের দোকানে প্রায় দশ বছর ধরে কর্মচারী খাটছে !
.
.
.
.
কথাগুলা এই জন্য বললাম, কারন নিউজ ফিডে ফ্রাসট্রেটেড তরুণ-তরুণীদের স্ট্যাটাস আশংকাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে ।
এর মেইন কারন, আমাদের ক্যারিয়ার ১টা প্ল্যানে সীমাবদ্ধ থাকে । সেখানে প্ল্যান বি বা সি বলতে কিছুই থাকে না ।
সাপোস, আপনি টার্গেট করলেন বিসিএস ক্যাডার হবেন, এখন প্রায় ৩ বছর পার হয়ে গেল বাট বিসিএস আপনার জন্য ক্লিক করলো না ।
বাট আপনি যদি পাশাপাশি ১টা ব্যাক-আপ প্ল্যান রাখতেন তাহলে এত টেনশনে থাকা লাগতো না ।
আরেকটা খুব বাজে মাইন্ড সেট আমাদের মাঝে কাজ করে, সেটা হচ্ছে আমরা কেউ ছোট শুরু করতে চাই না !
স্টিভ জবস রাতারাতি স্টিভ জবস হয়ে যান নাই ! পাশ করার কয়েক বছর নিজেকে গিনিপিগ বানান ।
বিশেষ করে যদি আপনি লাইফ সম্পর্কে বা নিজের প্যাশন সম্পর্কে শিউর না থাকেন । কয়েক জায়গায় জব করেন, কয়েকটা সেক্টরে জব করেন, বিভিন্ন মানুষের সাথে মিশেন ।
দেখবেন আপনার ভিশন অটোমেটিক চেঞ্জ হয়ে যাচ্ছে, ম্যাচুরিটি বৃদ্ধি পাচ্ছে । আপনি খুব ভালো ডিসিশন মেকার হয়ে যাচ্ছে । খুব সহজেই ক্যারিয়ারের জটিল জটিল ডিসিশনগুলো নিতে পারছেন ।
আর যাই হোক সেই চাচীর মত কাজকে ছোট মনে করে বসে থাইকেন না । তাহলে ক্যারিয়ার এক জায়গায় আটকে যাবে ! গ্যারান্টেড !
লাস্টলী বলবো, যে পরিমাণ টাইম আমরা নিজেদের পছন্দের প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করতে না পাবার জন্য বা জবে সিলেক্টেড না হতে পারার জন্য আফসোস করতে ব্যয় করি, সেই টাইমটা যদি দক্ষতা অর্জন করতে বা কিছু শিখতে ব্যয় করতে পারতাম, তাহলে ক্যারিয়ার নিয়ে এত ফ্রাস্ট্রেশন, হতাশা কোনটাই থাকতো না !
থ্রি ইডিয়টসের র্যাঞ্ছোর সেই বিখ্যাত উক্তি দিয়েই লেখাটা শেষ করি,
“সাকসেস না দক্ষতার পেছনে দৌড়াও ! সাক্সেস অটোমেটিক তোমার পেছনে পেছনে দৌড়াবে !”
আপনি কি আইবিএসহ, JOB, EMBA, BIBM, JU EMBA এর জন্য ১টা প্রোপার এবং সলিড প্রস্তুতি নিতে চাচ্ছেন ?
পাশাপাশি স্পোকেনটাকেও শানিয়ে নিতে চাচ্ছেন ?
তাহলে Capstone Education আপনার জন্য সবচেয়ে ভালো অপশন হতে পারে !
Capstone Education এর স্পেশাল ব্যাচগুলো থেকে শুধুমাত্র ২০১৭ এর ডিসেম্বর ইনটেকেই আইবিএর এমবিএতে রিটেনে কোয়ালিফাই করেছে প্রায় ৩২ জন !
শুধু তাই নয়, Capstone Education গত ৪ ইনটেক ধরেই আইবিএর এমবিএতে সাফল্যের শীর্ষে ।
প্রস্তুতিকে আর সহজ আর স্মুথ করতে Capstone Education দিচ্ছে লাইফ-টাইম স্টুডেন্টশীপ ভ্যালিডিটি ।
অর্থাৎ, একবার ভর্তি হলে পরেরবার কোর্সটি ফ্রি রিপিট করতে পারছেন ।
এছাড়াও দুর্বল ব্যাসিকের শিক্ষার্থীদের জন্য ফ্রি ব্যাসিক ডেভেলপমেন্ট ক্লাসের ব্যাবস্থাও ।
আইবিএ এমবিএর জুন ২০১৮ এর স্পেশাল ব্যাচে ক্লাস করতে আগ্রহীরা রেজিস্ট্রেশন করুন এই লিংক থেকে
আর যারা JOB এবং এমবিএ দুটোর প্রস্তুতি এক সাথে নিতে চান তাদের জন্য রয়েছে Capstone এর সময়োপযোগী কোর্স MBA + All JOB Solution.
এই ব্যাচগুলোর অন্যতম বড় বৈশিষ্ট্যগুলো হচ্ছেঃ
একবার ভর্তি হয়ে জব কনফার্ম না হওয়া পর্যন্ত এখানে ক্লাস করা যাবে, কোন ধরণের এডিশনাল ফি দিতে হবে না ।
এছাড়া দুর্বল ব্যাসিকের শিক্ষার্থীদের জন্য থাকবে ফ্রি ব্যাসিক ডেভেলোপমেন্ট ক্লাস ।
পান্থপথ, মৌচাক এবং চিটাগাং ব্রাঞ্চে ক্লাস করার জন্য রেজিস্ট্রেশন করুন এই লিংক থেকে
Recent Comments