চাকরীর বাজার প্রায় প্রতিদিন আগের চেয়ে বেশী প্রতিযোগিতামূলক হচ্ছে ।পাবলিক, প্রাইভেট মিলিয়ে প্রায় প্রতি মাসেই চাকরীর বাজারে নতুন নতুন গ্র্যাজুয়েট প্রবেশ করছেন ।
তাই ভালো মত প্রস্তুতি শুরু করা না গেলে গ্রাজুয়েশনের পর একটি আকাঙ্খিত চাকরী পেতে কয়েক বছর পর্যন্ত লেগে যেতে পারে । তবে আশার কথা হচ্ছে ১টি স্পেসিফিক টার্গেট নিয়ে আগালে এবং ঠিকমত পরিকল্পনা করা গেলে চাকরী আপনাকে খুঁজে নেবে ইনশাআল্লাহ্ !
নিচে জব প্রস্তুতির বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হচ্ছে ।
১। প্রস্তুতি শুরু হোক অনার্সে থাকা অবস্থায়ই
গ্রাজুয়েশন করার সময়ই ঠিক করুন আপনার প্রেফারড জব সেক্টর । এটা কখনই কোন সেক্টরে শ্যালারী বেশী এটা দেখে ঠিক করা উচিত না । বরং যে সেক্টরে আপনি কমফোরটেবল থাকবেন, যে কাজগুলো আপনার করতে ভালো লাগে এমন সেক্টর ঠিক করুন ।
হয়ত আপনার স্ট্রার্টিং শ্যালারী কম হবে, হয়ত শুরু দিকে কিছুটা স্ট্রাগল করতে হতে পারে । বাট ১টা পর্যায়ে ভালো ফল পেতে শুরু করবেন ইনশাআল্লাহ্ ।
২। একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন স্কিল বাড়ানোর দিকে ফোকাস করুন
বর্তমান জব সেক্টরে সিজিপিএর চেয়েও প্রফেশনাল স্কিলকে বেশী প্রায়োরিটি দেয়া হয় । তাই অনার্সে থাকা অবস্থাতেই বিভিন্ন প্রফেশনাল স্কিল বেসড কিছু কোর্স ( যেমনঃ এক্সসেল, নেটওয়ার্কিং, এডভান্সড কমিনিকেশন বা ম্যানেজারিয়াল কোর্স ইত্যাদি) অন্তত করে ফেলুন ।
এ ধরণের কোর্স ভালো জব পেতে আপনাকে অনেক অনেক বেশী সাহায্য করবে ।
৩। ইংলিশ স্পোকেনের প্রতি বিশেষ নজর দিন
ভালো ইংরেজী বলতে পারাটা আজকাল জব সেক্টরে একটি বিশেষ যোগ্যতা হয়ে দাঁড়িয়েছে । আমাদের দেশের অধিকাংশ জব মার্কেটিং বেসড ।
আর ভালো মার্কেটার হওয়ার জন্য ভালো ইংরেজী বলতে পারার কোন বিকল্প নেই । এর জন্য ভার্সিটি লাইফ থেকেই প্রস্তুতি নিন ।
প্রচুর পরিমাণে ইংরেজী শুনুন । এটা স্পোকেনের প্রথম স্টেপ । এরপর ১টা স্টাডি সার্কেল করতে পারেন । সেখানে রুটিন করে নিজেরা স্পোকেন প্র্যাকটিস করুন ।
দেখাবনে অল্প কিছুদিনের মধ্যে ভালো ফল পাচ্ছেন ।
৪। ছাত্র-জীবনেই পার্ট টাইম জবে ঢোকার চেষ্টা করুন
আমার এক ফ্রেন্ড আমাদের সাথেই ইঞ্জনিয়ারিং পড়া অবস্থায় ঢাকাতে ইলেক্ট্রনিক সামগ্রী ঠিকঠাক করার ১টি নামকরা অফিসে চাকরী নেয় । পাক্কা তিন বছর সে সেখানে লেগে ছিল ।
ফলাফল পাশ করার পর অন্যরা যেখানে ১টা ভালো স্যালারির জবের জন্য খাবি খাচ্ছিল সে তখন ১টি নামকরা ইঞ্জিনিয়ারিং ফার্মে বেশ মোটা স্যালারিতে ঢুকে যায় ।
৫। নেটওয়ার্কিং এর উপর বিশেষ নজর দিন
ভার্সিটির ফেমাস এন্ড পপুলার সিনিয়ারদের সাথে ভালো সম্পর্ক রাখা আপনাকে ভালো জব পেতে অবশ্যই সাহায্য করবে । আমি পাশ করার পর পরই, রেসাল্ট বের হবার আগেই বেশ কিছু সিনিয়ার ভাইদের কোম্পানি থেকেই জব অফার পেয়েছিলাম ।
এটা শুধুমাত্র সম্ভব হয়েছিল ছোট-বড় সবার সাথে ১টা হেলথি রিলেশন মেইন্টেইন করার কারণে ।
৬। বিশ্বের অর্থনীতি সম্পর্কে আপডেট থাকুন
এটা বিশ্বায়নের যুগ । সারা বিশ্বের অর্থনীতি ১টি আরেকটির সাথে জড়িয়ে আছে । টেকনোলোজি এবং স্কিলও পাল্লা দিয়ে পরিবর্তন হচ্ছে ।
তাই বিশ্ব অর্থনীতি কোন দিকে মোড় নিচ্ছে সে ব্যাপারে সজাগ থাকুন । কোন স্কিলগুলো এবং কোন ধরনের জব আগামী দশ বছর পর বিশ্ব অর্থনীতিকে নিয়ন্ত্রণ করবে সে ব্যাপারে সচেতন ধারনা রাখুন ।
আর সে অনুযায়ী নিজেকে প্রস্তুত করতে থাকুন ।
৭। মার্কেটিং স্কিল ইম্প্রুভ করুন
ইংরেজীতে ১টা ফ্রেজ আছে, ” Stealing someone’s thunder.” — এর মানে হচ্ছে অন্যের পরিশ্রম নিজের বলে চালায় দেয়া । কর্পোরেট ওয়ার্ল্ডে এটা হর-হামেশাই ঘটে থাকে ।
আপনি ১টা প্রজেক্টে খাটলেন, প্রচুর এফোর্ট দিলেন বাট জাস্ট ভালো মার্কেটিং স্কিল থাকার কারণে যাবতীয় ক্রেডিট আপনার কলিগ নিয়ে নিল । এরকমটা এভোয়েড করতে নিজেকে ভালো সেল করতে শিখুন ।
লিডারশীপ আর মার্কেটিং রিলেটেড প্রচুর বই আর আর্টিকেল পড়ুন ।
শেষ কথা
মনে রাখবেন কোন কিছুই এক দিনে তৈরী হয় না । তাই ধৈর্য এবং ফোকাস ধরে রাখুন ।
আজ এ পর্যন্তই । সামনে এ ধরনের আরো আর্টিকেল প্রকাশ করা হবে ইনশাআল্লাহ্ ।
0 Comments
Leave a comment