কয়েক সপ্তাহ আগে জুমার নামায শেষে মসজিদে বসে আছি। আমার পাশেই দান বাক্সের টাকা গণনার জন্য volunteer বসলো। প্রথমে তারা দানবাক্সে কি ধরনের নোট কয়টা করে পড়েছে সেটার ১টা হিসাব কাগজে লিখে ফেলে।
যেমন ধরি, ১০০ টাকার নোট ১০টা ছিল। তারা লিখবে ১০০×১০, ৫০ টাকার ২০ টা নোট থাকলে তারা লিখবে ৫০×২০ এভাবে। এরপর সবগুলো নোটের কাউন্ট করা শেষ হলে মোট একাউন্ট লিখে জমা করবে।
তো তাদের গণনার মাঝখানে সত্তোর্ধ্ব এক চাচা সেখানে যোগ দিলেন। কিছুক্ষণের মধ্যে গণনার কাজ শেষ হলো। এবার মোট একাউন্ট হিসাব করার পালা।
volunteer-দের একজন calculator চাইলো। ঐ আংকেল বললেন, calculator রাখো। আমাকে ডিজিটগুলো বলো, আমি calculator এর আগেই হিসাব করে দিচ্ছি।
একজন volunteer একটা একটা করে সংখ্যাগুলো বলছিল আর উনি দ্রুত হিসাবগুলো বলে দিচ্ছিলেন। এর মধ্যে আবার অনেকে আসছিল, যারা সেই হিসাবের মাঝখানেও দান করে যাচ্ছিল। আবার অনেকে টাকা ভাংতি করেও নিয়ে যাচ্ছিল।
সুতরাং, দেখা গেল, হিসাবটা আর সহজ থাকল না, multi-functional হয়ে গেল। কিন্তু ঐ আংকেলের কোনো ফারাক পড়লো না। উনি খুব সহজেই পুরো হিসাব মুখে মুখেই করে দিলেন। তাও প্রচন্ড দ্রুততার সাথে।
To be frank, এতো মাল্টি ফাংশনাল অপরেশন এতো দ্রুত করতে আমি আর কাউকে দেখি নাই। যাই হোক হিসাব-কিতাব শেষ হবার পর উনার সাথে কথা বলতে গেলাম যে, কিভাবে এতো দ্রুত হিসাব করেছেন উনি।
আংকেল জানালেন উনার বয়স এখন প্রায় ৭৬। SSC পাশ, পেশা চালের আড়তদার। উনার নেশাই হচ্ছে হিসাব করা, ছোটবেলা থেকেই উনি এটা পছন্দ করতেন। এমনকি চাউলের আড়তে সব ধরনের হিসাব উনি মুখে মুখেই করেন। তাই দ্রুত হিসাব উনার অভ্যাসে পরিণত হয়েছে।
গ্রুপে মাঝে মাঝেই পোস্ট দেখি যে, আমি preparation নেয়া শুরু করলাম মাত্র। দয়া করে ম্যাথ শর্টকাট ১টা বই কেউ রেফার করেন।
এর চেয়ে বড় বোকামী আর কিছু হতে পারে বলে আমার মনে হয় না। কারণ, concept clear হওয়া ছাড়া শর্টকাট খোঁজা মানে SSC পাশ না করেই অনার্সে ভর্তি হতে চাওয়ার মতো।
To be precious, ম্যাথে শর্টকাটের মূল aspect-টাই হচ্ছে আপনি ৭-৮ লাইনের মাল্টি ফাংশনাল অপরেশনগুলো কত দ্রুততার সাথে করতে পারছেন। সমীকরণগুলো কত দ্রুত মাথার ভেতরে assess করতে পারছেন।
হ্যাঁ কিছু কিছু ম্যাথের অবশ্যই ১-২ লাইনের magical কিছু শর্টকাট আছে, তবে এগুলোর সংখ্যা ২০-২৫% এর বেশি হবে না। তাই ultimate success অবশ্যই নির্ভর করছে আপনি কত দ্রুত হিসাব প্রসেস করা শিখেছেন।
আর এই ব্যাপারটা কোন বই, কোন টিউশন আপনাকে শেখাতে পারবে না। তারা সর্বোচ্চ ১টা রাস্তা আপনাকে দেখাবে বা process-টা বলে দিবে। কিন্তু আসল কাজটুকু আপনাকেই করতে হবে।
ক্যালকুলেশনকে শখে পরিণত করতে হবে। আপনার প্রতিদিন কাজকর্মের সাথে মিশিয়ে ফেলতে হবে।
ধরেন, আপনি শপিংয়ে গেলেন। দেখলেন যে, পছন্দের শার্টের উপর ২০% ডিসকাউন্টে অফার করছে। তাহলে ডিসকাউন্টের দাম ওদের কাছ থেকে জিঞ্জাসা না করে, নিজে নিজেই করে ফেলুন।
আবার নিজেই নিজেই ধরুন, যদি ডিসকাউন্টা ৩৫% হতো তাহলে দাম কত হতো। আবার ধরেন, টাকা দিতে গিয়ে দেখলেন ডিসকাউন্ট ২০% ঠিকই আছে কিন্তু সাথে ১৫% ভ্যাট যোগ হয়েছে, এর ফলে মূল্য কত টাকা হয়েছে সেই হিসাব মনে মনে কষে ফেলুন।
মোট কথা ম্যাথকে নিজের শখ বানিয়ে ফেলুন। ক্যালকুলেশনকে নিজের নেশা বানিয়ে ফেলুন । দেখবেন, এক মাসের মধ্যে ম্যাথে আপনার efficiency নাটকীয়ভাবে বৃদ্ধি পাবে, ইনশা-আল্লাহ।
Happy Preparing !
0 Comments
Leave a comment